
কোনো দলের স্বার্থে নির্বাচন বিলম্বিত করা উচিত নয়: বিএনপি নেতা নজরুল
কোনো রাজনৈতিক দলকে পুনর্গঠনের সুযোগ দিতে জনগণের ভোটদানের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে আপসের মাধ্যমে নির্বাচন বিলম্বিত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো দলকে সংগঠিত করার জন্য সময় লাগতে পারে, আবার কারোর মিত্র ও বন্ধুদের একত্রিত করার জন্যও সময় লাগতে পারে। এ কারণেই জনগণের ভোটদানের মৌলিক মানবাধিকার বিলম্বিত হবে—এটি হতে পারে না।’
শুক্রবার (১৬ মে) এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, তারা বিশ্বাস করেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাদের দাবি সম্পূর্ণ যৌক্তিক এবং এর বিরুদ্ধে কেউ কোনো যুক্তিসঙ্গত প্রস্তাব বা যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেনি।
তিনি বলেন, ‘এজন্যই আমি আবারও বলছি—দেশের সামনে থাকা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও সমস্যা সমাধানের জন্য রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কোনো বিকল্প নেই—নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত তাড়াতাড়ি এটি বুঝতে পারবে, ততই মঙ্গল।’
বাংলাদেশ লেবার পার্টি বাংলাদেশ লেবার পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুল মতিনের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘শোষণমুক্ত সমাজ গঠনে মাওলানা আব্দুল মতিনের ভূমিকা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার পেছনের যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। অন্তর্বর্তী সরকারকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধাগুলো ব্যাখ্যা করতে বলেন তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ সম্প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার পর তারা মে মাসের মধ্যে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হবেন। এর মাধ্যমে স্পষ্ট হবে যে, কোন সংস্কার প্রস্তাবে সকল রাজনৈতিক দল একমত এবং কোন প্রস্তাবে ভিন্ন মতামত রয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘যদি আমরা মে মাসের মধ্যে এটি বুঝতে পারি, তাহলে কি জুন মাসের মধ্যে সম্ভব নয়… আমরা যে প্রস্তাবগুলোতে আমরা সকলে একমত, সেই প্রস্তাবগুলো একত্রিত করি এবং একটি সনদ প্রস্তুত করি। আমরা সকলেই তাতে সই করি ও একমত হই যে, সংস্কারগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা উচিত।’
নজরুল বলেন, আইন বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে যেসব সংস্কার বাস্তবায়ন করা যেতে পারে—সেগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা উচিত। আর যেসব সংস্কারের জন্য সাংবিধান সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলো পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সেটি করতে পারবে।
তিনি বলেন, ‘যদি সকল রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছায় ও একটি যৌথ ঘোষণাপত্রে সেই করে—তাহলে সেই ঐকত্যের ভিত্তিতে কাজ এগিয়ে যাবে। যদি জুনের মধ্যে—এমনকি জুলাইয়ের মধ্যেও এই ধরনের অগ্রগতি সম্ভব হয়—তাহলে তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে ক্ষেত্রে কী প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারে।’
বিএনপি নেতা ডিসেম্বরের পরে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার পেছনের যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, নির্বাচন কমিশন বা রাজনৈতিক বাস্তবতা এই ধরনের বিলম্বকে সমর্থন করে না।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বাচন কমিশন নিজেই বলেছে—তারা জুনের মধ্যে সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবে।
নজরুল বলেন, বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক সংস্কার প্রস্তাব করে আসছে। এর মধ্যে জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা কর্মসূচি থেকে শুরু করে তারেক রহমানের ২৭ দফা এবং ২০২৩ সালে ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার পরিকল্পনার প্রস্তাব রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয়—সম্পূর্ণরূপে এর পক্ষে। তিনি আরও বলেন, সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, একবারে সম্পন্ন করার মতো কিছু নয়।সুত্র দৈনিক বাংলা